বুমেরাং বস্তুটি সম্পর্কে আপনারা অবগত নাও থাকতে পারেন। বুমেরাং হচ্ছে কাঠের তৈরি এক প্রাচীন অস্ত্র। যা নিক্ষেপ করা হলে উপবৃত্তাকার পথে প্রদক্ষিণ করে নিক্ষেপকারীর কাছেই ফিরে আসে। এক সময় এটি খেলনা হিসেবেও বহুল প্রচলিত ছিল। এখনও কিছু কিছু এলাকায় এটি খেলনা হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে।
 |
বুমেরাং |
ডোনাল্ড ট্রাম্প কীভাবে বুমেরাং-এর সাথে তুলনীয়? ট্রাম্প বুমেরাং হয়েছে হিন্দুদের ক্ষেত্রে। ট্রাম্পকে কীভাবে হিন্দুরা মাথায় তুলে নেচেছিল তা তো সকলেরই জানা আছে। তারপরও পুরনো বিষয়গুলো আবারও তুলে ধরা যাক। ভারতের রাজধানী দিল্লীতে হিন্দু সেনা নামক এক সংগঠন ট্রাম্পের সাফল্যের জন্য পূজো দিয়েছিল
লিংক। সেখানে সংস্থাটির প্রধান ভিষ্ণু গুপ্ত ট্রাম্পকে মানবতার রক্ষক বলে আখ্যা দেন। শুধু তাই নয় এই একই সংগঠন দিল্লীর যন্তরমন্তরে জাঁকজমকপূর্নভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্মদিন পালন করে
লিংক। এছাড়াও ট্রাম্প নিউ জার্সির এক হিন্দু মন্দিরে ৫ হাজার লোকের জন সমাবেশে ভাষণ দেন। দিওয়ালি উপলক্ষ্যে ট্রাম্পকন্যা ইভানকার হিন্দু মন্দিরে যাওয়াটাও তখন সাড়া ফেলেছিল
লিংক। আর বেশীকিছু দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না, কারণটা আগেই বলা হয়েছে বিষয়টা সকলেরই জানা।
 |
দিল্লীতে ট্রাম্পের জন্মদিন পালন |
এবার আসি কেন তারা ট্রাম্পকে সমর্থন করেছিল সেই কথায়। ট্রাম্পকে সমর্থনের কারণ হিসেবে তারা নানা রকম প্রসঙ্গ তুলে ধরে। কিন্তু আসল কারণ যে ইসলাম ও মুসলিম সম্পর্কে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি তা কারো অজানা নয়। এমনকি বিশ্ব মিডিয়াও রাখঢাক না রেখে এটা প্রচার করেছিল। আসলে তারা ভেবেছিল ট্রাম্পকে দিয়ে নিজেদের আখেড় গোছাতে পারবে। যেমন বাংলাদেশের হিন্দুরা বাংলাদেশে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ কামনা করেছিল
লিংক। কেন তারা ওবামার কাছে যায়নি? কারণ হল ওবামা কখনো তার বক্তৃতা বা টুইটে ইসলাম বা মুসলিম বিদ্বেষী কিছু বলেনি। এর আগে তারা মোদী ও নেতানিয়াহুর কাছেও একই আর্জি জানিয়েছিল, এই দুইজনও চরম মুসলিম বিদ্বেষী হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত।
প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। পোস্টের মূল বিষয়ে আসতে দেরী করার জন্য। ট্রাম্প কীভাবে বুমেরাং হল সেটা এখন খুলে বলবো। হিন্দুরা ভেবেছিল ট্রাম্পকে দিয়ে মুসলিমদের শায়েস্তা করবে। কিন্তু ঘটলো ঠিল উল্টোটা। ট্রাম্প শপথ নেওয়ার ১ মাস আগেই অরবিন্দা পিল্লালামারি নামের এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলা পুলিশের জেরার মুখে পরেন
লিংক। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, পুলিশ তো যে কোন সময় যে কাউকে জেরা করতেই পারে তাতে কি হয়েছে? এর উত্তরটা ওই মহিলাই দিয়ে দিয়েছে, ‘আমি ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বেল এয়ারে বাস করছি। এই প্রথম নাগরিক অধিকার পাওয়া নিয়ে সমস্যায় পড়তে হল'। এটাই শেষ নয়। ট্রাম্প শপথ নেওয়ার ১০ দিনের মধ্যেই পারামান রাধাকৃষ্ণন নামে এক ভারতীয় ব্যাবসায়ী আমেরিকার বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হয়
লিংক। জেরা হল, গ্রেপ্তার হল কিন্তু এর থেকে বড় কিছু না হলে ব্যাপারটা ঠিক জমছে না। সেটাও পূরণ হয়ে গেল ট্রাম্প ক্ষমতা হাতে নেওয়ার ১ মাসের মধ্যেই। আমেরিকার এক বারে দুই ভারতীয় শ্রীনিবাস কুচিভোটলা ও তার বন্ধু অলোক মাদাসানি গুলিবিদ্ধ হয়। এতে প্রকৌশলী শ্রীনিবাস কুচিভোটলা মারা যায়
লিংক। হ্যা যেই সাবেক মার্কিন নৌবাহিনীর সদস্য গুলি করেছিল সে গুলি ছোড়ার আগে বলেছিল, 'আমার দেশ ছাড়ো'। মনে করে দেখুন হিন্দুদের ট্রাম্পকে সাপোর্ট করার অন্যতম অজুহাত ছিল 'জাতীয়তাবাদ'।
 |
শ্রীনিবাস কুচিভোটলা |
হিন্দুরা ভেবেছিল ট্রাম্প আসলে মুসলিমদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিবে। হ্যা ক্ষমতা নেওয়ার কিছুদিন পরেই ৭টি মুসলিম দেশের শরনার্থীদের নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ঠিকই কিন্তু তা আদালত স্থগিত করেছে। এছাড়া ট্রাম্পের হাতে কোন মুসলিম বা মুসলিম দেশ আক্রান্ত হওয়ার কথা শোনা যায়নি। কিন্তু ভারতীয়দের অবস্থা দেখুন, তারা অলরেডি নিজেদের দেশে চাকরী খোজা শুরু করে দিয়েছে
লিংক। এমনকি তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যেতেও ভয় পাচ্ছে
লিংক। সবশেষে একটা কথাই বলা যায় অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়লে নিজেকেই পরতে হয়, তেমন হয়েছে হিন্দুদের অবস্থা।
কলম চলতে থাকুক
ReplyDeleteধন্যবাদ।
Delete